পড়ার কি শেষ আছে? না, পড়ার যেমন শেষ নেই, তেমনি শেষ নেই জানারও। মানুষ কৌতূহলী। সৃষ্টির শুরু থেকে অন্য প্রাণীদের চাইতে এগিয়ে থাকার রহস্যটাও এখানেই। মানুষ খুঁজে চলেছে প্রশ্নের উত্তর। সবসময় জানতে চেয়েছে নতুন কিছু। আর জানার জন্য বইয়ের উপরেও নির্ভর করেছে একটা সময় এসে।
বিশেষ করে, বর্তমান সময়ে নতুন আর অজানাকে জানার জন্য বই পড়ার চাইতে ভালো মাধ্যম খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু এত এত বই! কী করে এদের সবগুলো পড়ে ফেলা সম্ভব? না, সম্ভব নয়। তবে এক জীবনে সর্বোচ্চ বই তো পড়ে নেওয়া সম্ভব, তাই না? আর এতগুলো বই পড়ার জন্য প্রয়োজন বাড়তি গতিরও।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক পড়ার গতিকে বাড়িয়ে তোলার কিছু মোক্ষম কৌশল!
স্বাভাবিক পড়ার গতি কতটা থাকে?
পড়ার গতি মূলত নির্ধারণ করা হয় প্রতি মিনিট হিসেবে। এক মিনিটে আপনি কত শব্দ পড়ছেন তার ভিত্তিতে আপনার পড়ার গতি হিসেব করা সম্ভব। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ মিনিটে ৩০০ শব্দ পড়তে পারেন।
শিক্ষার্থীরা এক্ষেত্রে ৪৫০ শব্দ পড়ে থাকে এবং মাসে একটি বই শেষ করেন যারা, তারা মিনিটে ৫৭৫ শব্দ পড়েন। যা কি না প্রাপ্তবয়স্কদের পড়ার গতির গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। আপনার প্রতি মিনিটে পড়ার গতি কেমন জানতে চান? এখানে দেখুন।
বাড়িয়ে তুলুন আপনার পড়ার গতি
আপনার পড়ার গতি কতখানি? সেটাকে আরো একটু বাড়িয়ে তুলতে চলুন দেখে নেওয়া যাক নিচের কৌশলগুলো।
১) পিছু ফিরে দেখা আর নয়
অনেকেই আছেন যারা বই পড়ার একটা পর্যায়ে এসে আবার পেছনের দিকে চলে যান। নির্দিষ্ট কোনো একটি পৃষ্ঠা পড়েন। ব্যাপারটি কেবল বই পড়া নয়, মুভি দেখার ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। তবে আপনি দ্রুত বই পড়তে চাইলে এমন ইচ্ছা পোষণ করা চলবে না। যদি আপনি নতুন কোনো বিষয়ে পড়ে থাকেন এবং সেটা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে বলে পেছনের কোনো লাইন বা পৃষ্ঠা পড়ে থাকেন সেটা আলাদা ব্যাপার। তবে কেবল নিজের ভালো লাগার জন্য পেছনে ফিরে বারবার পড়া? উহু, একদম নয়!
২) এক পলকে পড়ে নিন
একটি বইয়ের পৃষ্ঠায় কী বলা হয়েছে সেটা বোঝার জন্য কিন্তু প্রতিটি শব্দ পড়ার প্রয়োজন হয় না। একবার চোখ বুলালেই হয় পৃষ্ঠার উপরে। এখানে চলে আসে পাঠক মনের ভয়। দরকারি কোনো অংশ বাদ পড়ে যাবে না তো? আপনি যদি কোনো গল্প বা উপন্যাস পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এমন কিছুই হবে না। তাই দ্রুত পড়ার জন্য এই কৌশলটিও আপনার কাজে আসতে পারে।
৩) মন যেন একদিকেই থাকে
আপনার চারপাশে যদি এমন অনেক কিছু থাকে যেগুলো আপনার মনকে অন্যদিকে পরিচালিত করে, তাহলে অবশ্যই বইয়ের উপরে থেকে আপনার মনোযোগ হারাবে এবং আপনাকে বারবার চেষ্টা করে সেই মনোযোগ ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যাপারটি কিন্তু সত্যিই বেশ কষ্টকর। তাই, বই পড়ার সময় চারপাশে যেন মনকে অন্যদিকে পরিচালিত করার মতো ব্যাপার না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
তবে হ্যাঁ। যদি এমন হয় যে, কোনো ব্যাপার, যেমন- সঙ্গীত, আপনাকে সাহায্য করছে পড়তে, তাহলে সেটা আপনি শুনতেই পারেন। এতে করে আপনার পড়ার গতি আরো বেড়ে যাবে।
তাহলে আর কী? শুরু করে দিন এই কৌশলগুলোকে মেনে নিয়ে দ্রুত বই পড়া।