বর্তমান যুগে মানুষকে একইসাথে কয়েক দিকে নজর রাখতে হয়। একের অধিক কাজ করায় হতে হয় দক্ষ। আর এই মানুষটি যদি হন কোনো নারী, বিশেষ করে একজন মা, তাহলে তার জন্য কাজটি হয়ে দাঁড়ায় আরো বেশি কঠিন।
একজন কর্মজীবী নারীকে যেমন কর্মস্থলে সেরা নিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, তেমনি সন্তানের দিকে যথাযত মনোযোগ দিয়ে হতে হয় একজন সেরা মা। কিন্তু এই দুটো একত্রে কী করে সম্ভব? অনেক নারীই দ্বিধায় পড়ে এই দুটো পরিচয়ের যেকোনো একটিকে বেছে নেন। কিন্তু না, কর্মজীবী নারী হয়েও আপনি একজন সফল মা হয়ে উঠতে পারেন। কীভাবে? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
রুটিনের আওতায় আসুন
রুটিন কিংবা সময় ভাগ করে নিয়ম মেনে চলা যে শুধু শিক্ষার্থীদের কাজ এমনটা নয়। যেকোনো ক্ষেত্রে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে হলে একটা রুটিন আপনাকে অনুসরণ করতেই হবে। একজন মা এবং একজন কর্মী হওয়ায় আপনার প্রচুর ছোট ছোট কাজ থাকবে, যেগুলো অল্পতেই হয়তো মাথা থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তাই ছোট এবং বড়-সব কাজেরই একটা নির্দিষ্ট সময় এবং নিয়ম মেনে চলুন। দেখবেন, দৈনন্দিন জীবন অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে।
কর্মক্ষেত্রে পরিষ্কারভাবে কথা বলুন
এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে, আপনার সমস্যার কথা অফিসে না বলা মানেই কেউ জানবে না যে আপনার এমন কোনো সমস্যা হচ্ছে। সন্তান জন্মের পর থেকে একজন মা নানা রকম সমস্যার মধ্যে দিয়ে যান, এবং এটা সবাই জানে। তাই নিজের কাজ এবং পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে সরাসরি কথা বলুন। হয়তো আপনাকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে। সেটি নিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় না থেকে কথা বলুন। কথা বললে যেকোনো সমাধান করা সম্ভব।
নিজের সুবিধা বিবেচনা করুন
ব্যাপারটি এমন নয় যে, আপনি আপনার সন্তান এবং নিজের ভালোটুকু বোঝেন না। কোনো ব্যাপারে দরকার পড়লে অবশ্যই পরামর্শ করুন। কিন্তু কেউ যদি তার সীমা অতিক্রম করে তাহলে নিজের জায়গাটুকু তাকে পরিষ্কার করে দেখিয়ে দিন। আপনার সন্তান আপনার সাথে কর্মস্থলে যাবে কি না, কোনো আত্মীয়ের সাথে থাকবে কি না এবং সেখানে সে কেমন বোধ করছে সেটা আপনিই ঠিক করুন। কারণ, আপনার চাইতে বেশি আপনার সন্তানের ব্যাপারে কেউ জানবে এমনটা হওয়া সম্ভব নয়।
সন্তান পালনের দক্ষতা কর্মস্থলে প্রয়োগ করুন
সন্তান একটি অনেক বড় দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালন করতে মানুষের বেশ কিছু নতুন দক্ষতাকে অভ্যাস করে নিতে হয়। সেটা হতে পারে, ইচ্ছে না করলেও কোনো কাজ মন দিয়ে করা, মানসিক অবস্থাকে সবসময় শান্ত রাখা, যেকোনো সময় যেকোনো কাজের জন্য প্রস্তুত থাকা ইত্যাদি। নিজের এই দক্ষতাগুলোকে কর্মস্থলে কাজে লাগান। দেখবেন আপনার কাজ আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে।
নিজের সাথে কথা বলুন
আপনি কোনো একটা দিন কোনো একটা কাজ ভালো করে করতে পারেননি বলেই যে আপনি ভালো কাজ করছেন না বা ভালো মা হতে পারছেন না এমন চিন্তা মাথা থেকে তাড়িয়ে দিন। কোনো সমস্যায় পড়লে নিজের সাথে কথা বলুন। বন্ধুর মতো নিজেকে নিজের ভুলগুলো দেখিয়ে দিন।
নিজেকে মানসিকভাবে ভালো রাখুন
অনেক সময় এত কিছু করতে গিয়ে নারীরা ভুলে যান যে, তাদের নিজের জন্যেও কিছু সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। আর নিজের জন্য সময় বের করতে না পারা থেকেই তৈরি হয় হতাশা, বিষাদ এবং অন্যান্য সমস্যা। তাই এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে নিজেকে কিছু সময় ও উপহার দিন। কারণ আপনি মানসিকভাবে ভালো থাকলেই আপনার কাজ ভালো হবে, আপনার শিশু ভালো থাকবে।